পোল্যান্ড সাধারণ নির্বাচন ২০২৩

জয় পেয়েও সরকার গঠনে অনিশ্চয়তায় পিআইএস, আশার আলো বিরোধী শিবিরে

পোল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে দেশটির জনপ্রিয় ডানপন্থী ল এন্ড জাস্টিস পার্টি ১৯৮ টি আসন পেয়ে সংখ্যাররিষ্ঠ দল হিসেবে জয়লাভ করেছে। দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ ইপসোস জানিয়েছে, পিআইএসকে সরকার গঠন করতে হলে মোট ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। তবে তা না হওয়ায় বিরোধী দল ডোনাল্ড টাস্কের সিভিক কোয়ালিশন পার্টির সরকার গঠনের একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। ফলে এক্সিট পোলের দিকে এগুচ্ছে দেশটির নির্বচানের ফলাফল। 

এদিকে সরকার গঠনের সুযোগ পেলে পিআইএসের জারোশ্লো কাজিন্সকির দীর্ঘ ৮ বছরেরে শাসনের অবসান ঘটানো হবে বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড টাস্ক। 

অন্যদিকে নির্বাচনের পর পিআইএসের নেতারা অবশ্য স্বীকার করেছেন, তারা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনে সক্ষম হবেন কী না বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্টতায় রয়েছেন। যদিও প্রাথমিকভাবে দলটি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছে। কারণ এক্সিট পোলে গেলে ৩৪ টি আসন হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। 

এর আগে ইপসোস রবিবার এক দফার ফল প্রকাশের পর সোমবার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের ফল প্রকাশ করেছে। 

এদিকে ফলাফলের পর এক বিজয় র‍্যালিতে সমবেত হয়ে ৬৬ বছর বয়সী টাস্ক তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, পোল্যান্ড জিতেছে, গণতন্ত্র জয়ী হয়েছে। তিনি বলেন, খারাপ সময়ের অবসান হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে দেশটিতে ১৯৮৯ সালে কমিউনিজম শাসনের পতনের পর এবারেই প্রথম ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট প্রয়োগ হয়েছে। স্থানীয় সময় রাত ৯ টায় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এরপরেও ওয়ার্শ এবং ক্রাকোউতে ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। 

 এবারের নির্বাচনে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে বলে জানিয়েছে ইপসোস। 

এদিকে মোট ৪৬০ টি আসনের মধ্যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করতে হলে দরকার ২৩১ টি আসন, এর বিপরীতে ১৯৮ আসন পেয়েছে পিআইএস। 

সিভিক কোয়ালিশন প্রধান টাস্ক এবারের নির্বাচনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন। এর আগে নির্বাচনের ওয়াদা হিসেবে তিনি ইউরোপিয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন, কোভিড মহামারির সময় দেশটির আটকে পড়া ৩৬ বিলিয়ন ইউরো (৩০ বিলিয়ন পাউন্ড) তহবিলের ছাড় করানো, ২০২১ সালে প্রনীত গর্ভপাত আইনটিকে আরও সহজতর করাসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। 

অন্যদিকে পিআইস নেতৃবৃন্দ তাদের প্রধান কাজিন্সকির প্রতি তাদের আস্থা রয়েছে বলে মত দিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা সরকারি বা বিরোধী যে অবস্থানেই থাকি না কেন, আমাদের মূল লক্ষ্য আমাদের সময়ে নেয়া প্রকল্পগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন করে দেশবাসীর সেবা প্রদান।  

মোট ৩০ হাজারেও বেশি পোলিং স্টেশনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশটির নির্বাচনে। এবারের নির্বাচনে ৬ লাখ অভিবাসী ভোট প্রদানের সুযোগ পেয়েছে। 

দেশটি মোট ৪১ টি জেলায় বিভক্ত। নিয়ম অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন। কিন্তু যদি পিআইএস আস্থা ভোটে হেরে যায় তবে নতুন একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবে পার্লামেন্ট। আর তিনি তখন তার পছন্দের দলকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন। তবে সে দলকেও আস্থা ভোটে জয়ী হতে হবে। আর এমনটা হলে শাসক দল পিআইএস চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। 

 অন্যদিকে ছোট দল হিসেবে থার্ডওয়ে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচনে ভাল অবস্থানে রয়েছে। তাদের প্রাপ্ত আসন ৫৭ টি। ইশতেহারে তারা বড় দুই দলের বিকল্প হিসেবে ও ট্যাক্সপ্রথা সহজীকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে ভাল সংখ্যক ভোটার টানতে সমর্থ হয়।

বিবিসি  

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //